রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৩:০৯ অপরাহ্ন

সি-সেকশনে ব্যথা উপশমে

একুশের কন্ঠ, অনলাইন ডেস্ক : জীবনের কোন কিছুর সঙ্গেই মাতৃত্বের স্বাদের তুলনা হয় না। তবে সব মা সন্তান জন্মদানের ক্ষেত্রে সাধারণভাবে সন্তান প্রসব করেন না। অনেকে সিজারিয়ান সার্জারির মাধ্যমে সন্তান জন্ম দেন।

সাধারণত যদি কেউ অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় কোনো জটিলতায় ভোগেন বা বাচ্চা মায়ের পেটে থাকার সময় এমন কোনো অবস্থানে থাকে, যা প্রাকৃতিক জন্ম-পদ্ধতির পক্ষে কার্যকর নয় বা ঝুঁকিপূর্ণ হয়, চিকিৎসকরা সেক্ষেত্রে শিশু প্রসবের জন্য মায়ের সিজারিয়ান সার্জারি করে থাকেন। তবে এ পদ্ধতিতে শিশুটি সুরক্ষিত ভাবে জন্ম নিলেও মায়ের সাধারণ জীবনে অনেকটাই অস্বাভাবিকতা থেকে যায় সি -সেকশনের পর।

অনেক নারীই সি-সেকশনের পরে পিঠের নিচে ব্যথা এবং সেই সঙ্গে সেলাই ও সাধারণ সার্জারির ব্যথায় ভোগেন। যদিও এই ব্যথা প্রসব ও গর্ভাবস্থার শেষে শরীরে মানিয়ে নেওয়ার অংশ হিসেবে খুব স্বাভাবিকই ধরে নেওয়া হয়। তবে যেহেতু সি-সেকশনে শরীরে অস্ত্রোপচারের পরে ক্ষত তৈরি হয়। এবং শরীরে যে কোনও ক্ষত থাকলে সেখানে জীবাণু এবং ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে যা দ্রুত নিরাময় করা যায় না। এটি আরো বেশি সংক্রমিত অসুস্থতাকে বাড়াতে পারে।

সাধারণত মনে করা হয় প্রসবের সময় সিজারের প্রয়োজন হলে অপারেশনের জন্য ইনজেকশন দেওয়াতে ব্যথা শুরু হয় তবে চিকিৎসকরা বলেন ইনজেকশন আসলে ব্যথার জন্য দায়ী নয়, মূলত কোমরের মাংসপেশি, লিগামেন্ট ও লাম্বার লাইনের স্বাভাবিক বক্রতা বেড়ে যাওয়ার ফলে এই ব্যথার সৃষ্টি হয়।

প্রায় তিন থেকে ছয় ঘণ্টা পরে অ্যানেসথেসিয়ার ইনজেকশন দেওয়া জায়গায় ব্যথা শুরু করে। মাথা ব্যথা এবং ঘাড়ের ব্যথা, যা সেরিব্রোস্পাইনাল তরল ফুটো হওয়ার ফলে ঘটে, সাধারণত প্রসবের ১২ ঘণ্টা পরে বা শিশুর জন্মের তিন থেকে চার দিন পর শুরু হয়। তবে এই ব্যথা কয়েক দিন বা এক সপ্তাহের মধ্যে কমে যায়। কারও কারও ক্ষেত্রে, ব্যথা এক মাস পর্যন্ত থাকে।

সি-সেকশনের এই ব্যথা কমাতে নারী ও শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার খাদিজা বেগম কিছু পরামর্শ দিয়েছেন:

এসময় উষ্ণ গরম পানিতে গোসল করলে উপকার পাওয়া যায় ।
কিছু সাধারণ ব্যায়াম করা যায় তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে। কারণ ব্যায়ামের ফলে সেলাই ফেটে যেতে পারে এবং আরও জটিলতা দেখা দিতে পারে।
সঠিকভাবে ঘুমানো জরুরি। ঘুমানোর জায়গাটি যেন সমতল হয় এবং খুব নরম না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।
গরম ও ঠাণ্ডা উষ্ণ চিকিৎসা নিতে হবে। সেক্ষেত্রে শীতল চাপ অদলবদল করে প্রয়োগ করলে পেশিগুলো শিথিল করতে এবং ব্যথার জায়গায় রক্তসঞ্চালন বাড়াতে সহায়তা করে। এটি করার জন্য একটি সাধারণ হিটিং প্যাড এবং এক প্যাক বরফ ব্যবহার করা যায়।
প্রসব-পরবর্তী ফিজিওথেরাপি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, বিশেষ করে কোমর ও পেটের শিথিল হয়ে যাওয়া মাংসপেশিগুলো শক্তি বৃদ্ধি করার জন্য কিছু থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ বা ব্যায়াম করতে হবে। যেমন পেলভিক-ফ্লোর এক্সারসাইজ, ব্যাক মাসল স্ট্রেন্দেনিং এক্সারসাইজ; অ্যাবডোমিনাল এক্সারসাইজ ইত্যাদি।
জন্মের পর থেকে বাচ্চাকে বিছানা থেকে তুলে কোলে নেওয়ার জন্য মাকে ক্রমাগত ঝুঁকতে হয়। এই কারণে মেরুদণ্ডে চাপ পড়ার ফলে কোমর ব্যথা হতে পারে। এতে ব্যায়াম খুব কার্যকর।

দ্রুত ক্যালরি পোড়াবে যে ৫ ব্যায়ামদ্রুত ক্যালরি পোড়াবে যে ৫ ব্যায়াম
কয়েকটি ধাপে ব্যায়ামগুলো করতে হবে

দেয়াল থেকে ১ - ২ ফুট দূরে সোজা হয়ে দাঁড়ান।
ধীরে ধীরে দেয়ালের দিকে ঝুঁকুন, নিজেকে বসার অবস্থানে নামিয়ে নিন। আপনার হিপ ও হাঁটু একে অপরের ৯০ ডিগ্রীতে থাকতে হবে।
গভীর শ্বাস নিন। শ্বাস ছাড়ার সময় ভাবুন, আপনি দেয়ালের দিকে আপনার নাভিকে টেনে নিচ্ছেন।
এই অবস্থানে পেটের পেশিগুলোকে সংকুচিত করে ক্রেগেল ব্যায়ামটি করতে পারেন।
যতক্ষণ সম্ভব ধরে রাখুন। ১ মিনিট বিরতি নিন। ৫ বার পুনরাবৃত্তি করুন।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Titans It Solution